মঙ্গলবার সকালে অনন্ত মহারাজের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেখা করা নিয়ে সরগরম উত্তরবঙ্গের রাজনীতি।
এই রাজনীতির নতুন সমীকরণ নিয়ে জল্পনা যখন তুঙ্গে, সে মুহূর্তেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অনন্ত মহারাজ একে নেহাতই 'সৌজন্য সাক্ষাৎ' বলেই দাবি করছেন। তাঁর কথায়, আজ সকালেই তিনি জানতে পারেন, মুখ্যমন্ত্রী তাঁর সঙ্গে দেখা করবেন। তিনি বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ হলেও মুখ্যমন্ত্রী তাঁর বাড়িতে এসেছেন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে যথাযোগ্য সম্মান এবং সৌজন্যের খাতিরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে স্বাগত জানিয়েছেন তিনি। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিলেন, তিনি বিজেপি রাজ্যসভার সাংসদ ছিলেন, এখনও রয়েছেন এবং আগামীতেও থাকবেন। তবে সৌজন্য বিনিময়ের পর মুখ্যমন্ত্রীর সাথে কোনরকম রাজনৈতিক আলোচনা হয়েছে কি না, তা নিয়ে কোন মন্তব্য করলেন না অনন্ত মহারাজ।
রাজনৈতিক মহলে চাপানউতোর, উত্তরবঙ্গের কোচবিহারে রাজবংশীদের একটা বিপুল ভোট রয়েছে। গ্রেটার কোচবিহার যে সংগঠন, তার অন্যতম নেতাই অনন্ত মহারাজ। বরাবরই তাঁর আলাদা রাজ্য অথবা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের দাবি। ২০১৯ সাল থেকেই অনন্ত মহারাজকে বিজেপির সাথে সক্রিয় হতে দেখা যায়। সেক্ষেত্রে ২০১৯ সালে প্রথম কোচবিহারে ও উত্তরবঙ্গে লোকসভা নির্বাচনে ভালো ফল করে বিজেপি । এরপর ২০২১-এর উত্তরবঙ্গ ও কোচবিহারে অনন্ত মহারাজকে সামনে রেখে ভালো কাজ করেছিল বিজেপি। তারপর বহু বিজেপি বিধায়ক আলাদা রাজ্য, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের দাবি নিয়ে সরব হন।
কিন্তু ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে হঠাৎই বিজেপির কাছে অনন্ত মহারাজ ক্ষিপ্ত হয়ে পড়েন বলে শোনা যায়। তার কারণ আলাদা রাজ্য অথবা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল নিয়ে সেভাবে কোন কিছুই হচ্ছে না বলে তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয় বলে তিনি দাবি করেন। এরপরেই দেখা যায়, লোকসভা নির্বাচনে সেভাবে সক্রিয় ছিলেন না অনন্ত মহারাজ। এমন কি অনন্ত মহারাজের পাশাপাশি তাঁর কর্মী-সমর্থকদের এবার বিজেপির বিভিন্ন জনসভায় দেখা যায়নি। যার ফল দেখতে হয়েছে উত্তরবঙ্গে। বিজেপির ভালো ফল হলেও কোচবিহার একমাত্র আসন যেটা বিজেপি করতে হয়েছে তৃণমূলের কাছে। এরপরই কোচবিহারে আসার পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেখা করলেন তাঁর সাথে। আজ এ নিয়েই নতুন রাজনৈতিক সমীকরণের আভাস পাচ্ছেন অনেকে।