বিশ্বের বিভিন্ন গণমাধ্যমে গুরুত্বের সাথে স্থান পেয়েছে কোটা সংস্কার আন্দোলনের খবর। বিশেষ করে সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় আন্দোলনকারী ও ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হওয়ার পর তা আন্তর্জাতিক মহলে সংবাদ শিরোনামে উঠে এসেছে। ইতিমধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ বিভিন্ন দেশ এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।
সরকারী চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে ২০১৮ সালে চলা শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর তার বাতিল করে বাংলাদেশ সরকার। পরবর্তীতে ২০২১ সালে কয়েকজন মুক্তি যোদ্ধার সন্তান হাইকোর্টে রিট করলে গত ৫ই জুন এক রায়ের মাধ্যমে আবারও ফিরে আসে কোটা ব্যবস্থা। এরপর শুরু হয় কোটা সংস্কার আন্দোলন। সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছে। সংঘর্ষে লাঠিচার্জ ও ইঁট নিক্ষেপের পাশাপাশি ছুরি ও বোমা ব্যবহার করা হয়।
বাংলাদেশে সাধারণ শিক্ষার্থীরা নিজেদের অধিকারের জন্য কোটা সংস্কারের আন্দোলন করছে। কোটা ব্যাবস্থায় ৫৬% কোটা আছে। এই কোটা ব্যবস্থায় ৩০% মুক্তিযুদ্ধ কোটা, যেখানে সাধারণ শিক্ষার্থীরা চাকরি, পড়াশোনা দুই ক্ষেত্রেই বৈষম্যের শিকার হয়ে পাচ্ছে মাত্র ৪৪% সুবিধা। এসব ক্ষেত্রে এরকম বৈষম্য মানা যায় না। তাই কোটা সংস্কারের জন্য চলে কোটা বিরোধী আন্দোলন। কিন্তু এই সমাবেশে ব্যাঘাত ঘটায় ছাত্রলীগ (সরকারী দল), পুলিশ। আহত হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রচুর ছাত্র-ছাত্রী। রংপুরে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থী। এছাড়াও এখনও পর্যন্ত সারা দেশে ৬ জনের মৃত্যুর খবর জানা গিয়েছে। আহতের সংখ্যা বেড়ে চলেছে ক্রমশ। এই আন্দোলন দমাতে মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ, এমনকি বিজিবিও।
চলতি বছর জানুয়ারির নির্বাচনে টানা চতুর্থ বারের মত ক্ষমতায় আসার পর সবচেয়ে বড় বিক্ষোভের মুখোমুখি হয়েছে সরকার। তুরস্কের সংবাদ সংস্থা আনাদুলু এজেন্সি এ বিষয়ে বলছে, বিভিন্ন স্থানে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের মিছিলে বাধা দেয় পুলিশ। কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে নিন্দা জানান, মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। এছাড়া কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর হামলায় নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে যুক্তরাজ্য ভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।