দূষণের আঁতুড়ঘর আলিপুরদুয়ার, পুরসভার ভূমিকা লাটে

যত্র-তত্র আবর্জনার স্তূপ। তা থেকে নিয়মিত দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। আবর্জনার পাহাড় জমেছে আলিপুরদুয়ার জেলা সদর হাসপাতালেও। সেই ময়লা পরিষ্কার করছে না আলিপুরদুয়ার পুরসভা, বলে দিনের পর দিন উঠেছে অভিযোগ।
  শুধু তাই নয়, শহর লাগোয়া কালজানি নদীর ধারে আবর্জনা ফেলায় সেখানে নদী দূষণ হচ্ছে। কিন্তু কারো কোন ভ্রূক্ষেপ নেই। সব মিলিয়ে দূষণের আঁতুড়ঘরে পরিণত হয়েছে সবুজে ঘেরা আলিপুরদুয়ার। সবুজের শহর আলিপুরদুয়ার এখন দূষণের শহরে পরিনত হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন শহরের নাগরিকরা।
  যদিও পুরসভার সাফাই, নির্বাচন বিধি থাকায় সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্প চালু করতে পারছে না পুরসভা। নির্বাচন বিধি নিষেধ উঠে গেলে সমস্যা মিটে যাবে। বিষয়টি নিয়ে শহরের বিভিন্ন মহলে ক্ষোভ ছড়িয়েছে।
  এ বিষয়ে আলিপুরদুয়ার জেলা সদর হাসপাতাল সুপার ডাঃ পরিতোষ মন্ডল বলেন, “হাসপাতাল চত্বর যেন আবর্জনার পাহাড় । পুরসভাকে বারংবার বলা সত্ত্বেও নির্বাচনী বিধির দোহাই দিয়ে আবর্জনা তুলতে নারাজ তাঁরা। এদিকে এত দুর্গন্ধে হাসপাতালে টেকাই দায় হয়ে গিয়েছে।”
  শুধু হাসপাতাল নয়, হাসপাতালের পেছনে কালজানি নদীর ধারে আবর্জনা ফেলছে পুরসভা এবং সেখান থেকে কালজানি নদীতে দূষণ ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আলিপুরদুয়ার নেচার ক্লাবের কর্তা ত্রিদিবেশ তালুকদার বলেন, “এটা আলিপুরদুয়ার শহর বলেই সম্ভব। অন্য কোন শহরে হলে পুরকর্তাদের জেলে ঢোকাতেন সাধারণ মানুষ। এভাবে নদী দূষণ করা যায় না। এই নদী দূষণের ফলে মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। আমরা অবিলম্বে এই নদী দূষণ বন্ধ করার আবেদন জানাচ্ছি।”
  উল্লেখ্য, ভোটের আগেই ঘটা করে সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্পের উদ্বোধন করে আলিপুরদুয়ার পুরসভা। মাঝেরডাবরি চা বাগানের কাছে ওই প্রকল্পে আবর্জনা প্রক্রিয়াকরণ করার কথা। কিন্তু সেই প্রকল্প উদ্বোধন হলেও চালু হয়নি আজও। ফলে শহরের আবর্জনা সেখানে যাচ্ছে না।
  বিষয়টি নিয়ে আলিপুরদুয়ার পুরসভার চেয়ারম্যান বাবলু করের বক্তব্য, “এখানে আবর্জনা প্রক্রিয়াকরণ হওয়ার কথা। কিন্তু ভোটের বিধি থাকায় নির্বাচন কমিশনের নিষেধ রয়েছে। সেই কারণে এই প্রকল্প চালু করা যাচ্ছে না। তবুও আমরা আবর্জনা যথা সম্ভব পরিষ্কার করার চেষ্টা করছি। কিন্তু মানুষের কিছুটা অসুবিধে হচ্ছে টের পাচ্ছি। এই সমস্যা মিটে যাবে। আর কালজানি নদীর ধারে আমরা আবর্জনা ফেলি না।”
  এদিকে বক্সা-জয়ন্তী ঘেরা সবুজের শহর আলিপুরদুয়ার জুড়েই এখন শুধু নাকে রুমাল দিয়ে চলাফেরা করছেন শহরবাসী। সকলের মুখে মুখে ফিরছে “ছিঃ ছিঃ! এত্তা জঞ্জাল!”