দামি দামি খাবার অর্ডার করে ডেলিভারি বয় থেকে নিয়মিত খাবার ছিনতাই। বাধা দেওয়ায় এক নামী অনলাইন ফুড সংস্থার ডেলিভারি বয়কে রীতিমত বাঁশপেটা। গুরুতর জখম ঐ ডেলিভারি বয় হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। পুরো ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
প্রথমে অনলাইনে সব দামি দামি খাবারের অর্ডার। তারপর ডেলিভারি বয় সেই খাবার নিয়ে এলে তার কাছ থেকে সেই খাবার ছিনিয়ে নিয়ে চম্পট। এই ধরনের এক ছিনতাইকারি গ্যাংয়ের খপ্পরে পড়ে গুরুতর জখম হলেন এক নামী অনলাইন ফুড সংস্থার ডেলিভারি বয়। অমিত ঘোষ নামে ওই ডেলিভারি বয়কে বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে মাথা ফাটানোর অভিযোগ দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। বর্তমানে আলিপুরদুয়ার জেলা সদর হাসপাতালে গুরুতর জখম অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে সে। লিখিত অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু করেছে আলিপুরদুয়ার থানা।
জানা গিয়েছে, শহরতলি এলাকায় বঞ্চুকামারি থেকে বৃহস্পতিবার রাত ন’টা নাগাদ পাঁচটি বিরিয়ানির প্যাকেটের অর্ডার আসে। অমিত সহ আরও পাঁচ ডেলিভারি বয় মিলে ওই খাবার নিয়ে বঞ্চুকামারিতে পৌঁছোয়। সে সময় প্রথমে দু’-তিনজন যুবক এগিয়ে এসে তাদের সঙ্গে কথা বলতে থাকে। পেছন থেকে একজন বাঁশ নিয়ে এসে তাদের ওপর এলোপাথাড়ি আক্রমণ চালায় বলে অভিযোগ। সেসময় অমিতের মাথায় হেলমেট ছিল না বলে তার মাথা ফেটে যায়। খাবারের পাঁচ প্যাকেট নিয়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। পরে চিৎকার-চেঁচামেচিতে স্থানীয়রা জড়ো হয়ে জখম অমিতকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। শুক্রবার আলিপুরদুয়ার থানায় অমিত লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। এই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে আলিপুরদুয়ার থানার পুলিশ। আলিপুরদুয়ার থানার আই সি অনির্বাণ ভট্টাচার্য বলেন, “আমরা এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছি। ওই এলাকায় একদিন আগেও এমন ঘটনা ঘটেছিল বলে জানতে পেরেছি। পুলিশ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে।”
১৫ মে বুধবার ওই এলাকায় অন্য এক সুমিত ঘোষ নামে ঐ অনলাইন ফুড সার্ভিসেরই এক ডেলিভারি বয়ের থেকে একই কায়দায় খাবার ছিনতাই করে পালায় দুষ্কৃতীরা। ১৬ তারিখ ফের পাঁচ প্যাকেট বিরিয়ানির অর্ডার দেওয়া হয়। আর সেই কারণে এদিন অমিতের সঙ্গে পাঁচ ডেলিভারি বয় নিয়ে খাবার ডেলিভারি দিতে ওই এলাকায় পৌঁছোয়। কিন্তু গ্রামের ফাঁকা জায়গায় দুষ্কৃতীদের আক্রমণের মুখে পড়ে তারা।
হাসপাতালের বেডে শুয়ে জখম অমিত ঘোষ বলে, “আমরা ছয়জন ছিলাম। বাইক থেকে নেমে দেখি তিন যুবক দাঁড়িয়ে আছে। তাদের সঙ্গে কথা বলছিলাম। তারাই অর্ডার করেছিল বলে জানায় ওই যুবকরা। এমন সময় পেছন থেকে একজন বাঁশ দিয়ে আমাদের মারতে শুরু করে। আমার মাথায় হেলমেট ছিল না বলে মাথায় লাগার পরেই রক্তাক্ত অবস্থায় আমি মাটিতে লুটিয়ে পড়ি। ওরা খাবার নিয়ে চম্পট দেয়। অন্য সাথীরাও ব্যাথা পেয়ে মাটিতে পড়ে যায়।”
স্থানীয় সূত্রে খবর নিয়ে জানা গিয়েছে, বঞ্চুকামারি যেখানে এই ঘটনা ঘটেছে সেখানে নিয়মিত মদের আসর বসছে। ওখানে একটি ধর্মীয় স্থান রয়েছে। তার পেছনেই এই ঘটনা ঘটেছে। তবে খাবার ছিনতাই করতে গিয়ে একজন যুবককে এভাবে মৃত্যু মুখে ঠেলে দেওয়ার ঘটনায় বিভিন্ন মহলে শোরগোল পড়ে গিয়েছে।