বাংলাদেশের ইলিশ বলে সুফল বাংলার স্টলে দেদার বিকোচ্ছে মায়ান

ইলিশ তুমি কার? বাংলাদেশের না মায়ানমারের? নাকি ডায়মন্ড হারবারের? এই প্রশ্ন দূরে সরিয়ে রেখে জামাই ষষ্ঠীর আগেই আলিপুরদুয়ারে ভেতো বাঙালি মেতেছে ইলিশে। সৌজন্যে রাজ্য সরকারের সুফল বাংলার স্টল। ‘বাংলাদেশের ইলিশ’ বলে বিক্রি হচ্ছে মায়ানমারের ইলিশ!
  ১৫ জুন পর্যন্ত বাংলাদেশে ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ফলে বাংলাদেশের ইলিশ এই মুহূর্তে রাজ্যে আসা কোনভাবেই সম্ভব নয়। কলকাতার বাজার থেকে মায়ানমারের এই সব ইলিশ পৌঁছচ্ছে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন বাজারে। প্রতিদিন ‘বাংলাদেশের ইলিশ’ বলে দেদারে বিক্রি হচ্ছে এই সব মাছ। ক্রেতারা ঠকছেন। কৃষি বিপণন দপ্তরের কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। এমনকি রাজ্য সরকারের সুফল বাংলা স্টলেও এই ইলিশ বিক্রি হচ্ছে। আলিপুরদুয়ার শহরে সুফল বাংলার স্টলে সোমবার ৫৬ কেজি ইলিশ নেমেছে। মঙ্গলবার এখানে ৪০ কেজি ইলিশ এসেছে। স্টলে আসার সঙ্গে  সঙ্গে প্রায় হাওয়া হয়ে যাচ্ছে এই ইলিশ।
  মায়ানমার হোক বা বাংলাদেশের! তাতে থোরাই কেয়ার করছেন ক্রেতারা। আলিপুরদুয়ারে সুফল বাংলার স্টল ম্যানেজার আমজাদ আলি বলেন, “রাজ্য সরকারের কৃষি বিপণন দপ্তরের সুফল বাংলা বিভাগের মাধ্যমে এই ইলিশ কলকাতা থেকে আমাদের কাছে এসে পৌছাচ্ছে। এগুলো পদ্মার ইলিশ। এগুলো আমদানি রপ্তানির বিষয়। এবার সরকারের সুফল বাংলা বিভাগ কিভাবে জোগাড় করছে তা আমরা বলতে পারব না।”
  কিন্তু আলিপুরদুয়ার কৃষি বিপনন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজির মাধ্যমে সুফল বাংলা স্টল চালায় রাজ্য সরকারের কৃষি বিপনন দপ্তর। এই স্টলে শুধু সবজি ও ফলের উপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। সবজি ও ফলের দামও নিয়ন্ত্রণ করে কৃষি বিপণন দপ্তর। অন্যান্য পণ্য ও দ্রব্যে সরকারের কোন নিয়ন্ত্রণ নেই।
  নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আলিপুরদুয়ার কৃষি বিপণন দপ্তরের এক মার্কেটিং অফিসারের কথায়, “সবজি ও ফল ছাড়া সুফল বাংলা স্টলে অন্য কোন পণ্য বা দ্রব্যে আমরা কোন নজরদারি চালাই না। অন্য পণ্য কোত্থেকে কিভাবে আনছে তা ফ্র্যাঞ্চাইজি কর্তৃপক্ষ তাদের নিজ দায়িত্বে আনেন।”
  এই বিষয়ে আলিপুরদুয়ার নিউ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক পুলক মিত্র অবশ্য বলেন, “আমাদের বাজারে বাংলাদেশর ইলিশের আমদানি হবে রথের পর। বাংলাদেশের ইলিশ এখন বাজারে আসে না।”
 সুফল বাংলা থেকে বুধবার একখানা ইলিশ কিনেছেন বিশ্বজিৎ মন্ডল। দাম পড়েছে ২৫০০ টাকা । তিনি বলেন,“ বাংলাদেশের ইলিশ বলেই একখানা ইলিশ নিলাম। এককেজির নিচে হলে ১৬৫০ টাকা কেজি দর। আর এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশ ১৭৫০ টাকা কেজি বিক্রি করছে ওরা। আমি এক কেজির বেশি ওজনেরটাই নিয়েছি।”