সিগন্যাল বিভ্রাট ছাড়াও দুর্ঘটনার পেছনে রয়েছে আর‌ও কারণ

শুধু সিগন্যাল বিভ্রাটই নয়, একাধিক ক্ষেত্রে যারা কর্তব্যরত রেল আধিকারিককেরা ছিলেন, তাঁদের কাজের খামতি রয়েছে বলে দেখা যাচ্ছে। তবে সবটাই তদন্ত সাপেক্ষ। এ বিষয়ে অন্তিম সিদ্ধান্ত নেবেন উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক। রাঙাপানি রেল স্টেশন সংলগ্ন রেল দুর্ঘটনাস্থল থেকে এমটাই বললেন কাটিহার ডিভিশনের ডিআরএম সুরেন্দ্র কুমার। 

  রেল দুর্ঘটনার পর মঙ্গলবার সকালে দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেন কাটিহার ডিভিশনের ডিআরএম সুরেন্দ্র কুমার। রেললাইনের সার্বিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার পাশাপাশি কোনরকম সমস্যা রেল কর্মীদেরও রয়েছে কি না, সেই সমস্ত বিষয়ে রেল কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। 

  সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, সোমবার সকাল থেকেই অটোমেটেড সিগন্যাল সিস্টেম সেটিতে সমস্যা হচ্ছিল, ঠিক মত কাজ করছিল না। সে কারণে রাঙাপানি থেকে পেপার সিগন্যাল দিয়ে ছাড়া হচ্ছিল ট্রেন। রাঙাপানি থেকে দুর্ঘটনাস্থল অবধি আসতে প্রায় ৯টি সিগন্যাল পার হতে হয়েছে দু'টি ট্রেনকে। ফলে দু'টি ট্রেনের চালক অটোমেটেড সিগন্যালের বদলে পেপার সিগন্যাল ফলো করেছিলেন। 

  আরও জানা যায়, দুর্ঘটনার সময় মালগাড়িটির গতিবেগ ছিল ঘন্টায় ৭৮ কিলোমিটার। কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ট্রেনটিকে রেল লাইনে দেখতে পেয়ে মালগাড়ির চালক যখন এমার্জেন্সি ব্রেক কষেন, তখন মালগাড়িটিকে থামতে আনুমানিক ১৭ সেকেন্ড সময় লাগত, কিন্তু ততক্ষণে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের পেছনে ধাক্কা মারে মালগাড়ি। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ন' জনের। মঙ্গলবারের খবরের ভিত্তিতে মৃত্যুর এই তালিকায় যোগ হয়েছে শিশু সহ আর‌ও ২, অর্থাৎ মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ১১। 

  এই মর্মান্তিক রেল দুর্ঘটনার পর উঠে আসছে একাধিক প্রশ্ন। পেপার সিগন্যাল ফলো করেছিল দুটি ট্রেন, তবে কেন এমন দুর্ঘটনা ঘটল? একই ট্র্যাকে দু'টি ট্রেনকে সিগন্যাল দিতে হলে ট্রেন  দু'টির মধ্যে অন্ততপক্ষে ১৪  কিলোমিটার দূরত্বে থাকতে হয়। তবে কী করে এত কম ব্যবধানে দু'টি ট্রেনকে সিগন্যাল দেওয়া হয়? তবে দায় কার? কারই বা গাফিলতির কারণে ঘটল এই মর্মান্তিক রেল দুর্ঘটনা? সবটাই তদন্ত করে দেখছে রেল দফতর। 

  ডিআর‌এম সুরেন্দ্র কুমার জানান, যুদ্ধকালীন তৎপরতায় দুর্ঘটনা ঘটার ১২ ঘন্টার মধ্যে আপ এবং ডাউন লাইন রেল চলাচলের জন্য পরিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল রাতে আপ লাইন ক্লিয়ার করে ইতিমধ্যে ট্রায়াল রান সম্পন্ন করা হয়ে। ডাউন লাইন মঙ্গলবার সকালে ক্লিয়ার করা হয়েছে। রেলকর্মীরা তৎপরতার সঙ্গে উদ্ধার কাজ সম্পন্ন করেছেন।