মালদা নয়, আলিপুরদুয়ারের শহরতলির এক বিঘার এক ব্যতিক্রমী আম বাগান। ল্যাংড়া, চৌসা, ফজলি, হিম সাগর থেকে শুরু করে বিশ্বের সবচেয়ে দামী জাতের মধ্যে অন্যতম জাপানের মিয়াজাকি, থাইল্যান্ডের ব্রুনাইকিং, নামডগমাই হোয়াইট, নামডগমাই শিয়ং, আমেরিকার রেড পালমার, তাই ওয়ানের তাইওয়াং রেড, বাংলাদেশের বারি ফোর, বারি ইলেভেন সহ দেশি-বিদেশি এক বাগানেই ৭২ প্রজাতির আম ফলিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন আলিপুরদুয়ারের প্রিয়রঞ্জন দেব ওরফে লোচা। শুনলে আরও অবাক হবেন, ৭২ প্রজাতির আমের গাছ সহ এই বাগান পাহাড়া দিতে বসানো হয়েছে ১২ টি সিসিটিভি ক্যামেরা। আর সেই ক্যামেরার লেন্সে সর্বক্ষণ নিজের সাধের আম বাগানে নজরদারি চালান আম বাগান মালিক।
লোচার আম বাগান এখন যেন শহরের ক্ষুদ্র পর্যটন কেন্দ্রই বটে। দিনভর লেগে থাকে বাগান প্রেমীদের আনাগোনা। আলিপুরদুয়ার শহর লাগোয়া দক্ষিণ জিৎপুরেই বাড়ি আলিপুরদুয়ার জংশন রেল ডিভিশনের কমার্শিয়াল সেকশনের গ্রুপ ডির রেলকর্মী প্রিয় রঞ্জন বাবুর। বাড়ির সঙ্গেই লাগোয়া তার সাধের আম বাগান। এক বিঘা জমির ওপর গত পাঁচ বছর থেকে আম বাগান গড়ে তুলেছেন নিজ হাতে। তবে তাঁর বাগানে আম ছাড়াও অন্য বেশ কিছু ফল ফুলের গাছ রয়েছে। সব মিলিয়ে গাছের সংখ্যা প্রায় ২০০। তবে ব্যতিক্রমী তার আমের চাষ।
৭২ প্রজাতির আমের মধ্যে ১৫ টি রয়েছে দেশি প্রজাতির আম। বাকি সবই বিদেশি প্রজাতির আমের চারা। আর এখানেই তাক লেগে গেছেন অনেকে। ডুয়ার্সের মাটি সাধারনত শাল, সেগুন , শিরিষের মত গাছের জন্য আদর্শ। কিন্তু এখানে ৭২ রকমের আমের গাছ লাগিয়ে তাতে ফলন আনা ব্যতিক্রমী ঘটনা বলেই মনে করছেন অনেকে। নিজের সন্তানের মতোই এই সব গাছের যত্ন করছেন। তিনি বলেন, “আমি আমার বাবার কাছ থেকে এই আম বাগান করা শিখেছি। বেতনের প্রায় বেশির ভাগ টাকাই এই আম বাগানে খরচ হয়ে যায়। অনেকেই অনেক চারা ও ফল কিনতে চান। কিন্তু আমি দিই না। কারণ আমি ব্যবসার জন্য নয়, আমার শখের জন্যই এই বাগান তৈরি করেছি। আমার আমবাগানে নজরদারি চালানোর জন্য ১২ টি সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো রয়েছে। তবে আমার পরিবার আমাকে এই কাজে খুব সহযোগিতা করে।"
এককথায় বললে, এক বিঘে জমিতেই আমের বিশ্ব এনে হাজির করেছেন লোচা দেব।