অবশেষে তৃণমূল ত্যাগ বরানগরের বিধায়ক তাপস রায়ের

লোকসভা ভোটের আগে দলের বর্ষীয়ান নেতা তাপস রায় তার বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ায় রাজনৈতিক মহলে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে। সুদীপ, তাপস দ্বৈরথ শেষ পর্যন্ত যে জায়গায় এসে পৌঁছেছে তা দলের শাসক দলের পক্ষে যথেষ্টই বিড়ম্বনার বলে রাজনৈতিক মহল মনে করছেন।   
দলের দুর্নীতি এবং সন্দেশখালির ঘটনার পর থেকে মুখ দেখাতে পারছেন না তৃণমূল কংগ্রেসের বরাহনগরের বর্ষীয়ান বিধায়ক তাপস রায়। এদিন নিজের বাড়িতেই সাংবাদিকদের সামনে একরাশ ক্ষোভ উগড়ে দিলেন তিনি। তাঁর বাড়িতে ইডি অভিযান করার পর দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় খোঁজ নেননি। এমনকি বিধানসভায় দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী তথা দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দোপাধ্যায় শেখ শাহজাহানের কথা বললেও তার নাম পর্যন্ত উচ্চারন না করায় ব্যথিত বলে অভিমান জানিয়ে বিধানসভায় পৌঁছে নিজের বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিলেন বরাহনগরের বিধায়ক। তাপস রায় বিধানসভায় পৌঁছে বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিলেন। স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘরে তাঁর হাতে ইস্তফাপত্র দেন তাপস। দল এবং বিধায়ক পদ ছেড়ে দিলেন তাপস রায়।
দলের পুরনো কর্মী বলে পরিচিত তাপস রায়ের বাড়িতে গিয়ে মান ভাঙাতে পৌঁছে যান ব্রাত্য বসু এবং কুণাল ঘোষ। দীর্ঘ বৈঠকের পরও তার ব্যর্থ হন।  এই বৈঠকের পরই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তাপস। তিনি জানান, দলে অবহেলিত, উপেক্ষিত এবং অসম্মানিত। সুতরাং ব্রাত্য, কুণালের ‘দৌত্য’ যে কাজে লাগেনি সেটা তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট। তাপস রায় বলেন, ‘‌২৪ বছর তৃণমূলের সঙ্গে আমার সম্পর্ক। অথচ ইডি অভিযানের ৫২ দিন পর একবারও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমার খোঁজ নেয়নি। দল পাশে দাঁড়ায়নি। বিধানসভায় মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী শেখ শাহজাহানকে ইডি টার্গেট করেছে বললেন। অথচ আমার বাড়িতে ইডি হানার কথা উল্লেখ করতেই পারতেন। আমি আহত, আঘাতপ্রাপ্ত।’
অন্যদিকে সাংবাদিকদের নানা কথা বলে কোনওরকমে স্থান ত্যাগ করেন কুণাল ঘোষ। আসতে তাঁরা বুঝতে পেরেছিলেন আর ঠেকানো যাবে না। তাহলে কি বিজেপিতে যোগ দেবেন তাপস রায়?‌ এই প্রশ্নের কোনও উত্তর দেননি বরাহনগরের বিধায়ক। কুণাল ঘোষ আজ বলেন, ‘‌আমি প্রায়ই তাপসদার বাড়িতে আসি। আজও এসেছি। নানা বিষয়ে কথাবার্তা হয়।’‌ তৃণমূল কংগ্রেসের দুই শীর্ষ নেতাই এটাকে নিতান্তই সৌজন্য সাক্ষাৎ বললেও মানভঞ্জনেই তাঁরা এসেছিলেন সেটা স্পষ্ট। আর তাপস রায় বলেন, ‘এত বছরে এই প্রথমবার আমি বিধানসভার বাজেট অধিবেশনে সেভাবে থাকতে পারিনি। আমি মনে করি, যে কোনও কাজে একটা স্বতঃস্ফূর্ত থাকা উচিত। এত বছর ধরে আমি তৃণমূল করছি।’
এছাড়া কলকাতা উত্তর লোকসভা কেন্দ্রে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে সংসদের টিকিট দেওয়ার বিরোধিতা করে আসরে নামেন তাপস রায়। তার পর থেকেই তাঁর সম্পর্কে দলের ভিতরে–বাইরে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল দলত্যাগ নিয়ে। তাপস আজ সাংবাদিকদের সামনে দাবি করেন, ‘‌ওরা যখন আমাকে বোঝাতে এসেছিল, তার মধ্যেই সুব্রত বক্সি শোকজ নোটিশ পাঠিয়েছেন কুণালকে। কুণাল ও ব্রাত্য দু’‌জনেই আমার ভাইয়ের মতো। ওরা আমার সঙ্গে কথা বলতে এসেছিল। মাঝেমধ্যেই আসে। রাজনীতিতে আমার সততা কারও অজানা নয়। নিজের দলের লোকই যদি আমার বিরুদ্ধে চলে যায়, সেটা দুর্ভাগ্যের। আমার বাড়িতে একটা সাজানো ইডি অভিযান হল।’ প্রবীণ এই রাজনীতিবিদ কি বিজেপিতে যোগ দিতে চলেছেন?  এই প্রশ্নের উত্তর অবশ্য এদিন মেলেনি।


Warning: include(layout/quick1.php): Failed to open stream: No such file or directory in /home1/esyac846/newsmetro.in/news-details.php on line 144

Warning: include(): Failed opening 'layout/quick1.php' for inclusion (include_path='.:/opt/cpanel/ea-php82/root/usr/share/pear') in /home1/esyac846/newsmetro.in/news-details.php on line 144